
প্রাইম নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ও নগর এলাকায় অলিগলিতে হাজার হাজার লাইসেন্সবিহীন ব্যাটারীচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। আর এসব অটোরিকশা চালকদের অধিকাংশই শিশু-কিশোর। করোনা মহামারির কারণে সংসারের চাহিদা মেটাতে কোমলমতি শিশু-কিশোররাও হাতে তুলে নিয়েছে ব্যাটারি চালিত এ যানের স্টিয়ারিং। আর এতে বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যা। তবে, প্রতিরোধের উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলা ও নগরীর মধ্যে প্রায় ৫-৬ হাজার ইজিবাইক চলাচল করে। এর মধ্যে বেশীরভাগ চালক শিশু ও কিশোর বয়সের। তাদের গাড়ি চালনায় ট্রাফিক আইন সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞানও নেই। এ সমস্ত শিশু-কিশোর চালক পাড়া-মহল্লা ছেড়ে প্রধান প্রধান সড়কগুলোতেও ইজিবাইক চালাচ্ছে। ইদানীং ব্যাটারি দিয়ে ইঞ্জিন চালিত রিকশা-অটোরিক্সা-ইজিবাইক সংখ্যা বাড়ছে। সড়ক-মহাসড়কে এসব যান চলছে। এসব যানের চালকদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু-কিশোর।
আরও জানা যায়, ব্যাটারি চালিত এসব যানের নেই ফিটনেস, রোড পারমিট ও চালকদের নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। যে কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। গাড়ি হিসেবে এসব যানবাহন স্বীকৃতি না পেলেও সদর উপজেলা ও নগর এলাকার আনাচে কানাচে এসব রিক্সার ছড়াছড়ি। তাছাড়া এসব অদক্ষ শিশু-কিশোর চালকদের কারোরই প্রতিষ্ঠানিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা না থাকায় যাত্রীদের সাথে চালকদের ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকে। ভাসমান বহু অদক্ষ রিকশা চালকদের অনেকেই জোর করে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে এমন অভিযোগও পাওয়া যায় হর-হামেশা।
সদর উপজেলা ও নগরীতে কমপক্ষে ১৫-২০ টি রিক্সা-অটোরিক্সা-ইজিবাইকের অবৈধ স্ট্যান্ড রয়েছে। অবৈধ এসব স্ট্যান্ডগুলোর প্রায় সবগুলোই সড়ক দখল করে গড়ে উঠেছে। সড়কগুলো দখল করেই এলোমেলোভাবে এসব অবৈধ যান রাখা হয়। ফলে পথচারীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এসব অটোরিক্সা বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্যাপক যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, ছোট শিশু কিশোররা এসব যানবাহন চালানোর ক্ষেত্রে রাস্তার এপাশ-ওপাশ, ডান-বাম, সাইট কিছুই চেনে না। তবুও তারা চালক। পাড়া-মহল্লার রাস্তায় অতি দ্রুত গতিতে রিকশা চালাতে গিয়ে বহু দুর্ঘটনাও ঘটছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি অসাধু রিকশা মালিক চক্র রাতের বেলা অবৈধভাবে সরকারি বিদ্যুৎ দিয়ে রিকশার ব্যাটারি চার্জ করেন। এ রকম অন্তত অর্ধ-শতাধিক অটোরিকশার গ্যারেজ রয়েছে নগর ও সদর উপজেলা এলাকায়।
সচেতন মহলের দাবি প্রশাসনের কঠোর নজরদারী না থাকায়, এসব শিশু কিশোর চালকরা অবৈধ রিকশা পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এতে দিন দিন জঞ্জাল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব।
সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা এ ব্যাপারে যেনো অচিরেই স্থানীয় প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে বিধি মোতাবেক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা জানতে চেয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কল রিসিভ করেন নি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক। মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায় সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
অপরদিকে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আলমগীর হিরণকে কল করলে তিনি একটি হাসপাতালে আছেন এবং পরে কথা বলবেন বলে জানান।
No posts found.